আজকাল সবকিছু আধুনিক ও ডিজিটাল, আমরা চাই সব কিছু সহজ ভাবে পেতে এবং আমরা চাই ঝামেলা কম যেকোন কাজ করতে । তাই মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অর্থের স্থানান্তর পরিষেবাটিকে আরও সহজ করে তুলেছে। আপনি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই পরিষেবা সরবরাহকারীর নগদ উদ্যোক্তা সম্পর্কে জানেন আপনি এই পরিষেবাটি বাংলাদেশের যে কোনও অঞ্চলে যে কোনও ব্যক্তির কাছে অর্থ স্থানান্তর করতে ব্যবহার করতে পারেন। সুতরাং এই পোস্টে আমি আপনাকে জানাব নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম-নগদ উদ্যোক্তা কমিশন সম্পর্কে ।
নগদ অ্যাকাউন্ট
বিকাশ বা রকেট বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার জন্য পরিচিত। তবে কিছুদিন ধরেই আর একটি ডিজিটাল মানি লেনদেনের পরিষেবা মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, এর নাম নগদ। সুতরাং, এই পোস্টে, আমরা নগদ অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়মগুলি নিয়ে আলোচনা করব।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম
বাংলাদেশ সরকারের ডাক বিভাগ নগদ নামে পরিচিত একটি ডিজিটাল লেনদেন পরিষেবা চালু করে। নভেম্বর ২০১৬ সালে ডাক বিভাগ সাধারণ মানুষের জন্য এই পরিষেবা চালু করেছে।
বর্তমানে জনপ্রিয় ও আলোচিত একটি ব্যবসা হল নগদ উদ্যোক্তা ও একাউন্ট। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা, কিভাবে করতে হয় এই নগদ এজেন্ট একাউন্ট। আপনাদের সুবিধার কথা করে, চিন্তা করে চলুন জেনে আসি কিভাবে করতে হয় নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টের জন্য যা যা লাগবে:
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- ন্যাশনাল আইডি কার্ড/জন্ম নিবন্ধন /ড্রাইভিং লাইসেন্স।
- নগদ একাউন্ট বাদে একটি মোবাইল নম্বর।
- ট্রেড লাইসেন্স।
- দোকানের সিল।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টের যেভাবে খুলবেন
আপনি ঘরে বসে নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টখুলতে পারবেন না। উদ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে নিচের ধাপসমূহ অনুসরণ করতে হবে।
- উদ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে চান, তাহলে আপনাকে নগদ একাউন্ট কিংবা নগদ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।
- অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন: ২ কপি ছবি, ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।
- ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে নিযুক্ত ব্যক্তি আপনার কাগজ-পত্র যাচাই করে নিবেন।
- কাগজ-পত্র যাচাই করে নিলে আপনার কাছ থেকে সর্বোচ্চ ২৮ মিনিট সময় তারা নিতে পারে।
- প্রয়োজনীয় জিনিস যাচাই করলে, তারা আপনাকে উদ্যোক্তা একাউন্ট সিম কার্ড দিয়ে দিবে।
- উক্ত সিম কার্ড প্রদানের মাধ্যমে আপনার উদ্যোক্তা একাউন্ট তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে।
নগদ অফিসের ঠিকানা:
ডেল্টা ডালিয়া টাওয়ার (লেভেল ১৩ এবং ১৪), ৩৬ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা -১২১৩
নগদ অফিসের ফোন নাম্বার:
16167 or 096 096 16167
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট কেন খুলবেন?
বর্তমানে আলোচিত একটি ব্যবসা হল নগদ উদ্যোক্তা বা নগদ এজেন্ট ব্যবসা। সময়ের সাথে এ ব্যবসায় ভালো মানের মুনাফা অর্জন করা যায়। বর্তমানে আজকাল ব্যবসার নতুন ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এই এজেন্ট ব্যবসা।
বর্তমানে যতগুলো মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রয়েছে, সবার মধ্যে নগদের তুলনামূলক সুযোগ-সুবিধা বেশি বিধায়, আজকাল নগদের গ্রাহক সংখ্যা বেশি। শুধুমাত্র এই কারণের জন্য হলেও আপনি যদি নগদ উদ্যোক্তা ব্যবসা করতে পারেন আপনি ভালো মানের টাকা আয় করতে পারবেন।
নগদ উদ্যোক্তা ব্যবসায় কতো টাকা দিয়ে শুরু করা যায়?
বর্তমানে আলোচিত একটি ব্যবসা হল নগদ এজেন্ট ব্যবসা। সময়ের সাথে সাথে এই ব্যবসার পরিধি বেড়েছে ব্যাপক। এই ব্যবসার লাভ ক্ষতি মূলত আপনার বিনিয়োগের উপর নির্ভর করে। আপনি যত বেশি টাকা মজুদ করবেন, আপনার মুনাফার পরিমাণ ঠিক তত বেশি হবে।
তবে এই ক্ষেত্রে বলা যায়, আপনি যদি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে নতুন হয়ে থাকেন আপনি মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন নগদ এজেন্ট ব্যাংকিং।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টে মুনাফার পরিমাণ
অনেকে রয়েছে যারা নগদ উদ্যোক্তা হতে চান, কিন্তু কিভাবে এই ব্যবসা থেকে থেকে মুনাফা অর্জন করে থাকেন সেই সম্পর্কে অনেকের জানা নেই। মূলত এই ব্যবসার মুনাফার গ্রাহকদের টাকা পাঠানো এবং উত্তোলনের উপর নির্ভর করে থাকে।
কাষ্টমার যদি ১০০০ টাকা উত্তোলন করে | প্রায় ৪.১০ পয়সা মুনাফা পাবেন |
এভাবে প্রতি লাখে ৪১০ টাকা পেতে পারেন। তাছাড়া আপনি কাস্টমারকে যদি নগদ একাউন্ট খুলে দিতে পারেন তাহলে টাকা পাবেন। সেই সাথে কমিশন আপনার এজেন্ট একাউন্টে যুক্ত হয়ে যাবেন। তাহলে, প্রতিদিন যদি ৩০০ টাকাও মুনাফা হয়, ৩০ দিনে ৯,০০০ টাকা আয় হয়।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টের সুবিধা
বর্তমানে নগদ উদ্যোক্তা ব্যবসা সকলের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। কিন্তু, আমরা কি জানি কি ধরণের সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে এই নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টে?
- অল্প পরিশ্রমে অধিক আয় করা যায় বিধায় গ্রাহকগণ এই পেশায় আগ্রহী হচ্ছে।
- এই একাউন্টে লেনদেন করা অনেক নিরাপদ। তাই এই একাউন্টে গ্রাহকগণ আগ্রহী হচ্ছে।
- মূল ব্যবসার পাশাপাশি আপনি উদ্যোক্তা একাউন্ট বা এজেন্ট একাউন্টের ব্যবসা করতে পারবেন। এই জন্য মানুষ বেশি এগিয়ে আসছে এই ব্যবসায়।
নগদ এজেন্ট একাউন্টের অসুবিধা
নগদ একাউন্ট সুবিধা থাকলেও এদের বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে।
- সাধারণ কোন ব্যক্তি এই উদ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে পারবেন না।
- নগদ একাউন্টের ক্ষেত্রে পুরো টাকা ব্যাংক থেকে তুলতে হবে।
- শুধুমাত্র যাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারাই নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে পারবে।
নগদ উদ্যোক্তা ব্যবসায় স্থান নির্বাচন
আপনি যখন ব্যবসা করবেন, তার লাভ ক্ষতি শুধুমাত্র যে বিনিয়োগের উপর নির্ভর করবে, তা কিন্তু নয়। বরং কোন ব্যবস্থা কতটা সাফল্য অর্জন করবে তা নির্ভর করে স্থানের উপর।
আপনি যখন ব্যবসা করবেন, তার লাভ ক্ষতি শুধুমাত্র যে বিনিয়োগের উপর নির্ভর করবে, তা কিন্তু নয়। বরং কোন ব্যবস্থা কতটা সাফল্য অর্জন করবে তা নির্ভর করে স্থানের উপর।
দোকানের জন্য সঠিক স্থান
- জনসমাগম পূর্ণ স্থান। যেমন: বাজার,হাসপাতাল।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ,লোকাল এড়িয়ার মধ্যেই।
- শপিং-মল, সুপার-শপ,অফিস আদালয়ের আশেপাশে।
দোকানের জন্য সঠিক স্থান নয়
- নীরব এলাকা।
- দূরবর্তী স্থান।
- মানুষের যাতায়াত করে কম এমন স্থান।
পরিশেষ
সময়ের সাথে সাথে নগদ উদ্যোক্তা ব্যবসা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রাহকদের পরিপূর্ণ সেবা প্রদানের মাধ্যমে নগদ হয়ে উঠেছে সকলের আশা ভরসার একমাত্র কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে। সময়ের সাথে মানুষের পেশাগত জীবনে এসেছে পরিবর্তন। মানুষ এখন কারো অধীনে চাকরি করতে চায় না।
বরং স্বাধীন পেশা হিসেবে, নিজের চিন্তাধারা কাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলে, নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে চায়। পেশাগত জীবনে নিজের কাজ করার পূর্ণ স্বাধীনতার খুঁজে পাবার নিমিত্তে আবির্ভাব হয়েছে উদ্যোক্তা। এটি এমন একটি পেশা, যেখানে আপনি নিজের পছন্দ অনুযায়ী, যেকোনো কিছু নিয়ে ব্যবসা করে নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।