মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতি এবং ফি ২০২২

মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতি এবং ফি ২০২৩

মোটর সাইকেল এখন অতি প্রয়োজনীয় একটি বাহন। বাংলাদেশের যা যোগাযোগ ব্যবস্থা এতে করে আপনি যদি যে কোন স্থানে দ্রুত যাতায়াত করতে চান তাহলে আপনার প্রয়োজন হবে একটি মোটর সাইকেলের। কিন্তু মোটর সাইকেল কিনার পর পরই আমাদের পড়তে হয় কঠিন ভোগান্তিতে। কারন মোটর সাইকেল চালাতে হলে আপনার প্রয়োজন হবে মোটর সাইকেল লাইসেন্স এর। অর্থাৎ আপনার প্রয়োজন হবে ২০২৩ সালে মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন এর। অর্থাৎ আমরা জানি যে মোটরসাইকেল ব্যবহার এর ক্ষেত্রে এটা আইনগত হতে হবে। আইনগত বা যে কোন সমস্যা মোকাবিলার ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল সহ যে কোন যানবাহনকে (বি আর টি এ ) এর নির্ধারিত পদ্ধতি আনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আসুন জেনে নেই কিভাবে আমরা আমাদের মোটরসাইকেল রেজিসট্রেশন সম্পন্ন করব। Motorcycle Registration Fee 2023 in Bangladesh.

মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতি ২০২৩

বাংলাদেশে মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন কিছুটা জটিল প্রক্রিয়া এবং অনেক বেশি ভোগান্তির। অনলাইনে মোটরসাইকেল সম্পর্কিত ব্লগগুলোতে আমরা প্রায়ই রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত প্রশ্ন এবং অভিযোগ দেখে থাকি এর জটিলতার কারণে। রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া সময়ের সাথে সাথে একটু একটু করে বদলে যায় এবং এটা বিআরটিএ(BRTA) র বিভিন্ন জায়গায় জটিলতা তৈরী করে। আর তাই সারগো আইটি নিউজের এই পোস্টে আমি আলোচনা করেছি মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতি ২০২৩।

মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

মোটর সাইকেল সংক্রান্ত সকল কাগজ পত্র যে কোম্পানি থেকে আপনি মোটর সাইকেল টি ক্রয় করেছেন অর্থাৎ মোটর সাইকেল ডিলার হতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করুন। এখানে তার একটি তালিকা দেওয়া হলো

  1. আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এর কপি।
  2. মোটর সাইকেল আমদানি সংক্রান্ত কাগজ পত্র।
  3. যে আমদানি কারক আমদানি করেছেন তার  অনুকূলে সোনালী ব্যাংকের ট্রেজারি চালান।
  4. কাস্টমস সংক্রান্ত কাগজপত্র।
  5. মোটর সাইকেল ক্রয়ের ক্যাশ মেমো।
  6. গেট পাস।
  7. যে ডিলার থেকে নিয়েছেন ও আমদানি কারক উভয়ের অনুকূলে মূসক ১১ চালানপত্র।
  8. মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন ফর্ম।
আরো পড়ুনঃ  ড্রাইভিং লাইসেন্স বর্ধিত ফি ২০২৩

আপনি যদি নিজে মোটর সাইকেল রেজিষ্ট্রেশন করতে চান তাহলে উক্ত কাগজপত্র অবশ্যই যে ডিলার থেকে আপনি মোটর সাইকেল ক্রয় করেছেন তার থেকে বুঝে নিন। অনেক সময় ডিলাররা ইচ্ছাকৃত কিছু কিছু কাগজপত্র দিতে চাননা । কারণ আপনি যাতে রেজিষ্ট্রেশন করতে হয়রানির স্বীকার হন এবং যার ফলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ডিলার দ্বারাই রেজিষ্ট্রেশন করান। তাই মোটরসাইকেল নিজে রেজিষ্ট্রেশন করতে চাইলে অবশ্যই সকল কাগজপত্র নিজে সংগ্রহ করে নিন।

মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন ফর্ম কোথায় পাবেন?

আপনি সরাসরি বিআরটিএ (BRTA) ওয়েব সাইটে গিয়ে কিংবা এইখানে ক্লিক করে ফরমটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। অবশ্যই তার আগে উপরোক্ত কাগজপত্র গুলি সংগ্রহ করে ফরমটির সাথে যুক্ত করে দিবেন।

আর অবশই সকল কাগজ সঠিক ভাবে দিয়েছেন কিনা তা সতর্কতার সাথে দেখে নিবেন। কারণ মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুবই ঝামেলাপূর্ণ তাই ছোট খাটো কোন ভুলের জন্যেও হয়রানি হতে হয় অনেক। ফরম পূরণের পর BRTA এর অফিসে গিয়ে এপ্লিকেশন সেটটি যাচাই করে নিন।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করতে এইখানে ক্লিক করে স্টার বাটন প্রেস করুন।

যদি তারা অনুমোদন দেয়, তাহলে বিআরটিএ অফিস থেকেই রেজিষ্ট্রেশন ফিশ পরিশোধ করতে বলে একটি এসেসমেন্ট স্লিপ (মানি ডিপোজিট স্লিপ) দেয়া হবে যাতে আপনার যানবাহন এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্যাদি দিয়ে পূরণ করতে হবে এবং মোটরসাইকেল কেনার খরচের বিশদও তাতে উল্লেখ করতে হবে।

যথাযথভাবে এসেসমেন্ট স্লিপটি পূরণের পর অফিশিয়াল সাক্ষর এবং সিল নিতে ভুলবেন না।

মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন খরচ ২০২৩

মোটরসাইকেলর সিসি অনুযায়ী মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন খরচ ভিন্ন ভিন্ন হয়। তাই নিচে একটি তালিকা দেওয়া হল যে আপনার মোটর সাইকেলের জন্য মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন খরচ ২০২২ কতো হবে তা মিলিয়ে নিন।

বাইকের সিসিখরচের বিস্তারিতসর্বমোট খরচ
৫০-১০০ সিসি
ওজন ৯০ কেজির নীচে 
রেজিঃ ফি ৪২০০ টাকা
রেজি সার্টিফিকেট ৫৪০ টাকা
নাম্বার প্লেট ২২০০ টাকা
ইন্সপেকশন ফি ৪৫০ টাকা
রোড ট্যাক্স ৫০০০ টাকা
১২৩৯০ টাকা
৫০-১০০ সিসি
ওজন ৯০ কেজির উপরে
রেজিঃ ফি ৪২০০ টাকা
রেজি সার্টিফিকেট ৫৪০ টাকা
নাম্বার প্লেট ২২০০ টাক
ইন্সপেকশন ফি ৪৫০ টাকা
রোড ট্যাক্স ১০,০০০ টাকা
১৭,৩৯০ টাকা
১০১-১৫০ সিসি
ওজন ৯০ কেজির নীচে
রেজিঃ ফি ৫৬০০ টাকা,
রেজি সার্টিফিকেট ৫৪০ টাকা
নাম্বার প্লেট ২২০০ টাকা
ইন্সপেকশন ফি ৪৫০ টাকা
রোড ট্যাক্স ৫০০০ টাকা
১৩,৭৯০ টাকা
১০১-১৫০ সিসি
ওজন ৯০ কেজির উপরে
রেজিঃ ফি ৫৬০০ টাকা
রেজি সার্টিফিকেট ৫৪০ টাকা
নাম্বার প্লেট ২২০০ টাকা
ইন্সপেকশন ফি ৪৫০ টাকা
রোড ট্যাক্স ১০,০০০ টাকা
১৮,৭৯০ টাকা 

সকল ফিশ এবং চার্জের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ হবে। তাই আপনাকে ব্যাংকে ডিপোজিট করার সময় ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ জমা দিতে হবে৷

আরো পড়ুনঃ  ড্রাইভিং লাইসেন্স ডোপ টেস্ট সনদ নেওয়ার নিয়ম

আপনার কত খরচ হবে তা আপনি খুব সহজেই বিআরটিএ ওয়েবসাইটে গিয়ে বিশেষ ক্যালকুলেটরে শুধু বাইকের তথ্য দিয়েই হিসেব করে নিতে পারেন।

আর না করলেও ক্ষতি নেই, আপনাকে দেয়া এসেসমেন্ট স্লিপে কত টাকা খরচ করতে হবে, তা উল্লেখ করাই থাকবে।

মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন ফর্ম জমাদান

ব্যাংকে ডিপোজিট করার পর আপনার সকল কাগজপত্রের যে সেটটি তৈরী হয়েছে এপ্লিকেশনের সাথে, তা বিআরটিএ’র যানবাহন রেজিষ্ট্রেশন ডেস্কে জমা দিন।

এপ্লিকেশনটি জমা দেয়ার পর যানবাহন পরিদর্শক আপনার সকল কাগজপত্রের সাথে সাথে আপনার মোটরসাইকেলটিও পরিদর্শন এবং যাচাই করবে।যানবাহন পরিদর্শক কর্তৃক আপনার কাগজপত্র এবং যান যাচাইয়ের পর আপনাকে একটি একোনলেজমেন্ট স্লিপ দেয়া হবে যাতে রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার, ফিটনেস এবং ট্যাক্স টোকেন দেয়া থাকবে৷

রেজিষ্ট্রেশনের এই পর্যায়ে এলেই আপনি মোটরসাইকেল নিয়ে দেশের যে কোন জায়গায় বেরিয়ে পড়ার জন্য অনুমোদিত হয়ে গেছেন।

মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন সার্টিফিকেট

বায়োমেট্রিক রেজিষ্ট্রেশন এর জন্যে আপনাকে ডাকা হবে। তথ্যসংগ্রহের  কিছুদিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে রেজিষ্ট্রেশন এর কাজ৷ রেজিষ্ট্রেশন সমপন্ন হলে আপনি মোবাইল ফোনে মেসেজ পাবেন। এবং ডেস্ক থেকে আপনার নম্বরপ্লেট সংগ্রহ করতে পারেন। সাধারণত ১ মাস সময়ের মধ্যেই পাওয়া যায়।

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন যাচাই

আগে এক সময় মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন যাচাই করার জন্য অফিসে গিয়ে খোঁজ খবর নিতে হলেও এখন আর তার প্রয়োজন পড়েনা। আপনার ফোন থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করুন VAHAN স্পেস দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার দিয়ে পাঠিয়ে দিন 7738299899 এবং ফিরতি মেসেজে আপনার গাড়ির তথ্য দেখে নিন। ডিজিটাল নম্বর প্লেট সংক্রান্ত তথ্যের জন্য আপনার মোবাইল দিয়ে NP লিখে এস,এম,এস করুন ৬৯৬৯ নাম্বারে (নাম্বার টি অবশ্যই আপনি যে নাম্বারটি রেজিষ্ট্রেশন ফরমে উল্লেখ করেছেন সেই নাম্বার হতে হবে)

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নবায়ন

একটি মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশন এর পর নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে অনুমোদন পায়। সেই সময় অতিবাহিত হলে আবার পুনরায় নবায়ন করতে হয়। ট্যাক্স টোকেন ইস্যু করতে আপনার রেজিষ্ট্রেশনের পূর্ব্ববর্ত্তী কাগজ পত্র নিয়ে BRTA  কর্তৃক নির্ধারিত  ব্যাংকে পূনরায় ফী প্রদান করে ইস্যু করে  নিতে পারেন নতুন করে।

আরো পড়ুনঃ  গাড়ির নাম্বার প্লেটে (ক,গ,ভ,ঘ) বর্ণমালার পরিচিতি

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *