শিশুদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২২
|

শিশুদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩

শিশুদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩- Rules for issuing e-passport to children 2023 – বাংলাদেশ সরকার মেশিন রিডেবল পাসর্পোট প্রবর্তন করা হয়েছে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে ২৪ এপ্রিল ২০১৬ সালে এর পর দুটো তাড়া তাড়ি আমাদের কাছে পাসপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করবে সরকার। বাংলাদেশ সরকার ২২ জানুয়ারী ২০২০ সালে বিশ্বর ১১৯ তম দেশ হিসাবে ঘোষনা করেন ই পাসপোর্ট ব্যাপারটি নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের কে শিশুদের ই পাসপোর্ট করতে কি লাগে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

১৫ বছরের কম, অপ্রাপ্তবয়স্ক বা শিশুদের পাসপোর্ট করার নিয়ম, কি কি কাগজপত্র লাগবে, কিভাবে অনলাইনে শিশুর ই-পাসপোর্টের আবেদন করবেন বিস্তারিত বলব।

বাংলাদেশে পাসপোর্ট করার নিয়ম অনুযায়ী ই পাসপোর্টের আবেদনের জন্য যে কোন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন হয়। যেহেতু, ১৮ বছর হওয়ার পরও অনেকে জাতীয় পরিচয় পত্র হাতে পায় না। তাই ১৮-২০ বছর বয়স পর্যন্ত এনআইডি কার্ড না থাকলে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে আবেদন করা যাবে।

সাধারণত আমরা অপ্রাপ্তবয়স্ক বলতে বুঝি ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিকে। কিন্তু পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ১৫ বছরের কম বয়সীদের শিশু বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক বিবেচনা করা হয়।

শিশুদের ই পাসপোর্ট করার সকল নিয়ম

আমাদের বাংলাদেশের ১৮ বছরের নিচে বা অপ্রাপ্ত বয়স নাগরিকের বা শিশুদের জন্য ই পাসপোর্ট করতে আবেদন করতে হবে। শিশুদের ই পাসপোর্ট করার জন্য যে সকল ডকুমেন্ট গুলো লাগবে,এটা আমরা অনেকেই জানি না। আজকে আমি আপনাদেরকে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব।

পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির আবেদন প্রক্রিয়া ও ফি একই। আবেদনের ক্ষেত্রে কোনরকম পার্থক্য নেই। তবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ক্ষেত্রে বয়সভেদে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করতে এইখানে ক্লিক করে স্টার বাটন প্রেস করুন।

ছোট শিশুদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

১ দিন থেকে ১৫ বছর বয়স্ক শিশুদের পাসপোর্ট করতে নিম্মোক্ত কাগজপত্র লাগবে।

  • জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি
  • পিতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
  • মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
  • জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য একজন আত্মীয়ের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর
  • ছবি (৬ বছরের কম বয়সী হলে)
  • এনওসি – NOC বা অনাপত্তি পত্র (সরকারি/ আধা সরকারি/ স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরীজীবির সন্তানের ক্ষেত্রে)
  • পাসপোর্ট ফি পরিশোধের এ চালান কপি
আরো পড়ুনঃ  মালয়েশিয়ায় পাসপোর্ট পেতে অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট

শিশুদের ই-পাসপোর্ট ফর্ম

ই-পাসপোর্ট করার জন্য আমাদের বা আপনাদের প্রথমে যেটি লাগবে তা হল অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি। আমাদের ই-পাসপোর্ট করার জন্য ইন্টারনেট বা অনলাইনের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট এর আবেদন করতে হবে। আপনার আবেদন ফরম টি সঠিক নিয়মে পূরন করে সাবমিট করতে হবে। আবেদন করার পর প্রিন্ট কপি টা আপনার প্রয়োজন পড়বে। এটি আপনার কাছে নিয়ে রাখবেন। আপনি এই কাজটি অফ লাইনে বা হাতে ও করতে পারবেন। তবে আমি আপনাদের কে বলি আপনারা অনলাইনে করে নিন তা না হলে অনেক দেীড় ধাপ পাড়তে হয়। ঘরে বসে বা কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে কাজ করে নিতে পারবেন।
শিশুদের ই পাসপোর্ট করতে যে লিংকে যেতে হবে তা হল: Crick Now

শিশুদের জন্ম নিবন্ধন সনদ

ই পাসপোর্ট করার জন্য আপনার বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন অবশ্যই লাগবে। জন্মনিবন্ধন হচ্ছে ছোট শিশুদের নাগরিক সনদ। অবশ্যই আপনার বাচ্চার জন্ম সনদটি  অনলাইন বার্থ সার্টিফিকেট হতে হবে । ফটোকপি ও হাতে লেখা করে সত্যায়ন করা হলে চলবে না এখন সব ডিজিটাল প্রযুক্তি তাই অনলাইনেই করতে হবে। অবশ্যই অবশ্যই আপনাক অনলাইন থেকে প্রাপ্ত বাংলাদেশ সরকার থেকে প্রদত্ত বার্থ সার্টিফিকেট নিতে হবে।

পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র

আমাদের বাংলাদেশের সাধারণত যাদের ১৮ বছর হয়নি তাদের আইডি কার্ড নেই। সুতরাং শিশুদের বাবা-মার অবশ্যই এনআইডি কার্ডের রয়েছে। শিশুদের ই পাসপোর্ট করার জন্য অবশ্যই মা-বাবার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি আবেদনপত্র সঙ্গে জমা দিতে হয়। 

জরুরী যোগাযোগ

পাসপোর্টে জরুরী যোগাযোগ করার জন্য একজন আত্মীয়ের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিতে হয়। এটি পরিবারের অন্য কোন সদস্য বা কোন নিকট আত্মীয়ের তথ্য ও ফোন নম্বর দিতে পারেন।

ছবি

শিশুর বয়স ৬ বছরের কম হলে, অবশ্যই শিশুর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপির উপরের বাম পাশে আঠা দিয়ে সংযুক্ত করতে হবে। শিশুর বয়স ৬ বছরের বেশি হলে তার প্রয়োজন নেই।

আরো পড়ুনঃ  ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি ২০২৩

এনওসি- NOC (সরকারি চাকরীজীবির সন্তান হলে)

যদি আপনি সরকারি/ আধা সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত কোন প্রতিষ্ঠানের চাকরীজীবি হন, আপনার সন্তানের পাসপোর্ট করার জন্য অবশ্যই আপনার ডিপার্টমেন্ট থেকে একটি অনাপত্তি সনদ বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হবে।

যদি আপনি একইসাথে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন, তাহলে একটি NOC দিয়েই আপনি আপনার উপর নির্ভরশীল স্বামী/ স্ত্রী ও সন্তানদের পাসপোর্ট আবেদন করতে পারেন।

এছাড়া, এককভাবে শুধুমাত্র শিশুর পাসপোর্ট আবেদন করলেও তার নামে আপনার অধিদপ্তর বা অফিস হতে একটি এনওসি নিতে হবে।

এনওসি দিয়ে পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কোনরুপ পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে না। এছাড়া, সাধারন পাসপোর্টের ফি দিয়েই জরুরী পাসপোর্ট পাবেন।

শিশুদের ই-পাসপোর্ট ফি কত

আপনি পাসপোর্ট দুটি সিস্টেমে করতে পারেন।

১। সাধারন
২। ইমারজেন্সি

১। সাধারনঃ সাধারণ পাসপোর্টের মতোই পাসপোর্টটি করা হয়। এই পাসপোটের ক্ষেত্রে টাকা লাগে ৩০০০ টাকা ও তার সাথে ১৫% ভেট ৪৫০ টাকা। আমাদের পাসপোর্ট পেতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ২১দিন।

 ২। ইমারজেন্সিঃ আপনার যদি খুব তাড়াতাড়ি পাসপোর্ট দরকার পড়লে তাহলে আপনি টাকা বাড়িয়ে দিয়ে পাসপোর্টে ১১ দিনের মধ্যে করে নিতে পারেন এ পাসপোর্ট চেক করার জন্য আপনার ৬০০০ টাকা লাগতে পারে।

আপনি পাসপোর্ট করার জন্য যে সকল তথ্য দিয়ে আবেদন করেছেন সেই তথ্য যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে পাসপোর্ট নিয়ে যাওয়ার জন্য। এই বিষযে যদি আরো জানতে ইচ্ছা হয় তাহলে তাদের ওয়েব সাইটে গিয়ে দেখতে পারেন। এই লিংকে ক্লিক করুন: dip.gov.bd

ফি পরিশোধের চালান

এ চালানের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে হবে। অনলাইনে সরাসরি এ চালান অ্যাপ থেকে বা ওয়েবসাইট থেকেও ডেবিট কার্ড, বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে পারবেন।

এছাড়া যে কোন ব্যাংক থেকেও এ চালান জমা দিতে পারেন। চালান কপি অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ  ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম - পাসপোর্ট তৈরি হয়েছে কিনা?

শিশুদের ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

ই পাসপোর্টের জন্য শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্যই অনলাইনে আবেদন করতে হয়। প্রথমে অনলাইনে আবেদন করুন। এরপর পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করার পর, চালান কপি ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র পাসপোর্ট অফিসে জমা দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।

সাধারণ একজন শিশুর পাসপোর্ট আবেদন ২ ভাবে হতে পারে, ১) বাবা/মায়ের পাসপোর্ট আবেদনের সাথে অথবা ২) আলাদাভাবে শিশুর পাসপোর্ট আবেদন।

পিতা-মাতার সাথে একসঙ্গে পাসপোর্ট আবেদন করলে অনেকটা হয়রানি কম হয়। তবে উভয়ক্ষেত্রেই আবেদন প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি’র পরিমাণ একই। দেখুন ই পাসপোর্ট আবেদনের নিয়ম

শিশুদের ই পাসপোর্ট করতে কত দিন লাগে

প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের ই পাসপোর্ট আবেদন ও পাসপোর্ট ডেলিভারীর প্রক্রিয়া একই। স্বাভাবিক ডেলিভারী সময়ের কিছুটা হেরফের হতে পারে।

উপসংহার

আপনার শিশুদের ই পাসপোর্ট করার জন্য যে সকল বিষয় প্রয়োজন পড়ে বা লাগে তার সামান্য কিছু আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম যা দিয়ে আপনারা পাসপোর্ট করতে পারেন। যদি কোন ভুল থাকে তাহলে ক্ষমার চোখে দেখবেন।


কোন তথ্য জানার ইচ্ছা হলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ সবাই কে।

Similar Posts

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *